দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য পরিচিত। দেশটি শিক্ষার উপর অনেক জোর দেয় এবং এটি একটি জাতীয় অগ্রাধিকার হিসাবে বিবেচিত হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার শিক্ষায় প্রচুর বিনিয়োগ করে, এবং ফলস্বরূপ, দেশটির সাক্ষরতার হার প্রায় 100%।
দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক এবং বিনামূল্যে। ছয় বছর বয়সে শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছয় বছর, তারপরে তিন বছর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং তারপরে তিন বছর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। উচ্চ বিদ্যালয়ের পরে, শিক্ষার্থীদের একটি বৃত্তিমূলক স্কুল বা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা তার কঠোর এবং প্রতিযোগিতামূলক প্রকৃতির জন্য পরিচিত। শিক্ষার্থীরা কঠোর অধ্যয়ন করবে এবং ভাল গ্রেড অর্জন করবে বলে আশা করা হয়, এবং অনেকেই তাদের নিয়মিত স্কুলে পড়াশুনার পরিপূরক করার জন্য আফটার-স্কুল একাডেমিতে (যাকে “হ্যাগওনস” বলা হয়) যোগদান করে। একাডেমিকভাবে সফল হওয়ার চাপ বেশি, এবং ছাত্রদের প্রায়ই একটি ভারী কাজের চাপ থাকে, অনেকে রাতে ভালোভাবে পড়াশোনা করে।
দক্ষিণ কোরিয়াতে উচ্চশিক্ষাও অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক, অনেক শিক্ষার্থী দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় যেমন সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, কোরিয়া ইউনিভার্সিটি এবং ইয়নসেই ইউনিভার্সিটিতে প্রবেশের চেষ্টা করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে দেশের সেরাদের মধ্যে বিবেচনা করা হয় এবং সারা বিশ্বে অত্যন্ত সমাদৃত।
দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থাকে দেশের অর্থনৈতিক সাফল্যের জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে, তবে এটি রোট শেখার উপর জোর দেওয়া এবং সৃজনশীলতা এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার উপর জোর দেওয়ার অভাবের জন্যও সমালোচিত হয়েছে। সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনকে আরও উন্নত করতে শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য সরকার এবং শিক্ষাবিদদের কাছ থেকে সাম্প্রতিক আহ্বান রয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, দক্ষিণ কোরিয়াও শিক্ষাকে বৈশ্বিক রপ্তানি হিসেবে প্রচার করছে। সারা বিশ্বের অনেক শিক্ষার্থী, বিশেষ করে এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে, দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভাষা ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করতে আসে। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারও দেশটিকে শিক্ষা পর্যটনের গন্তব্য হিসেবে প্রচার করছে।
উপসংহারে, দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা তার উচ্চ মান, কঠোরতা এবং প্রতিযোগিতামূলক প্রকৃতির জন্য পরিচিত, এবং এটি দেশের অর্থনৈতিক সাফল্যের মূল চালিকাশক্তি। যাইহোক, একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্বের পাশাপাশি সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য চলমান বিতর্ক এবং প্রচেষ্টা চলছে।